আযানের সময় কুকুর চিৎকার করে কেন?
প্রথমেই বলবো অসাধারণ প্রশ্ন। বর্তমানে আমি নেকড়ের ডাকের উপর ডক্টরেট করছি। সুতরাং, আশাকরি এই উত্তরের সাথে আরো অনেক আকর্ষণীয় তথ্য দিতে পারবো, যা আপনাদের উৎসাহী করতে সক্ষম হবে।
প্রথমে বলি কুকুর এলো কিভাবে?
বলা হয় কুকুর হলো নেকড়ের নির্বাচনী প্রজনের ফল। কুকুরের বিজ্ঞান সম্মত নাম (Canis lupus familiaris) আর নেকড়ের (Canis lupus- ভারতীয় নেকড়ে – Canis lupus pallipes ) শুধু সাবস্পেসিএস এর আলাদা। নেকড়েরা বিশাল চারণভূমি (Homerange) নিয়ে থাকে। সেটা প্রতিরক্ষা করার জন্য হাউল করে। এটি ওদের নিজের এলাকা জাহির করার একটা পদ্ধতি। সেই কারণে অন্য হাউল শুনলেই ওরা উত্তর দেয় হাউল এর মাধ্যমে। এমন ভাবেই তাদের মধ্যে এই আচরণ প্রকৃতিস্থ হয়েছে, যে তারা কোথাও থেকে এই ধরণের আওয়াজ শুনলেই হাউল করে (তা সাইরেন হোক বা অন্য কিছু )। বিবর্তনের নিয়ম অনুযায়ী সেই হাউলের কম্পাঙ্ক এর পরিসর এমন যাতে বহুদূর অব্দি শুনতে পাওয়া যায়।
আজান খেয়াল করে দেখবেন এমন একটা কম্পাঙ্কের হয় যাতে বহু দূর অব্দি শোনা যায়। হাউল আর আজান প্রায় সম-কম্পাঙ্কের হয়। কুকুরকে আমরা নিজেদের প্রয়োজনের মতো করে খাপ খাইয়ে নিয়েছি। কিন্তু তাদের হাউল এর এই আচরণ রয়ে গেছে। আসলে পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়েনি। তাই আজানের আওয়াজ শুনলেই তারা হাউল করার চেষ্টা করতে থাকে। আরও খেয়াল করলে দেখবেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধু মাত্র সকালের প্রথম দুই আজান এবং দিনের শেষ দুই আজান এই ওরা বেশি চিৎকার করে. এই দুটি সময়ই নেকড়ের একটিভ সময়। কোনো একটা কারণে কুকুর তার বন্য বিকল্পের মতো হাউল করতে অক্ষম (কেন? সেটা না হয় অন্য কোনো দিন অন্য কোনো উত্তরে দেব)। উপরোক্ত কারণেই কুকুর আজান শুনলেই হাউল করার চেষ্টা করে, বার্ক বা ভৌ ভৌ করতে থাকে।