কীভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিদিন ২০০০ টাকা করে উপার্জন করা সম্ভব?
প্রশ্নটি দেখে অনেকেই চোখ কপালে তুলে দূরে সরে যাবেন! বলবেন এই হাসি ঠাট্টার প্রশ্ন করে কোন দুঃখে!
How to earn 2000 from Facebook everyday?
সবার স্বাভাবিক ভাবেই মনে হয় ফেসবুক তো একটা কথোপকথন, ছবি, পোস্ট ইত্যাদি করার অপ্রয়োজনীয় একটা মাধ্যম মাত্র, এখান থেকে টাকা উপার্জন কেমনে সম্ভব!!
তো বলি আপনি আমি নিজে যা করি ভাবি অপর মানুষটাও হয়তো অনলাইনে বসে ঠিক আমার মতোই বেকার সময় অতিবাহিত করছেন! যাদের টাকা উপার্জনই একমাত্র লক্ষ্য তাদেরকে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব আর কোরা যেখানেই দেখতে পান না কেন, সে ঠিকই টাকা উপার্জনের পথ গুলো তার জন্য আরও সহজ করে নিচ্ছে।
এখন বলি আসলেই কি প্রশ্নটি যথাযথ হয়েছে! আদৌ কি ফেসবুক থেকে দিনে ২০০০ টাকা উপার্জন করা সম্ভব।জানিনা ২০০০ টাকা দিনে উপার্জন সম্ভব কি না তবে মোটামুটি ভালোই উপার্জন সম্ভব হবে। তো আমার থেকে উত্তরটা হ্যাঁ ই হবে।তবে সম্পূর্ণটা আপনার উপরেই নির্ভর করে। কেন হ্যাঁ হবে সেটার উত্তর না দিয়ে আগে এমন নজির আছে কি না সেটাই আপনাকে দেখিয়ে দিচ্ছিঃ
- BigDawsTv: এটি একটি ইউটিউব চ্যানেলের নাম।এদের ফেসবুক পেইজে ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে গত বছর সবচেয়ে বেশি আয় প্রায় ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়৷
- Jay Shetty: ভারতীয় নাগরিক হওয়া সত্যেও গো উইসডম ভাইরাল ভিডিও করে ফেসবুক থেকে সবচেয়ে বেশি আয়ের তালিকায় নিজের নামটি শক্তপোক্ত ভাবেই স্থান করে নিয়েছেন।
- Ankur Agarwal : ভারতীয় ইউটিউবার এবং পাশাপাশি একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার। যিনি ইউটিউবের থেকেও বেশি ফেসবুক এ আমাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে বেশি টাকা উপার্জন করেছেন।
- Billi4You: ভারতীয় টেকনোলজি ভিত্তিক ইউটিউবার। যিনি তার ব্লগ ওয়েবসাইট ফেসবুক ইন্সট্যান্ট আর্টিকেল এর সহয়তায় ফেসবুক পেইজে সংযুক্ত করে অনেক আয় করেন।
ভাবছেন যে ওনারা তো সবাই সেলিব্রিটি। বড় বড় ইউটিউবার, তারা তো আয় করবেনই। তাহলে বলি, তারা কি ভেসে ভেসে সেলিব্রিটি হয়ে গেছেন৷ তাদের জীবনে যথাযথ পরিশ্রমের নজির রয়েছে৷ তারাও আপনার মতোই শূন্য থেকেই শুরু করেছিলেন। তবে তারা শুরুতেই টাকা উপার্জনের চিন্তায় বিভোর ছিলেন না। পরিশ্রম না করে তো দিনে ২ টাকাও উপার্জন হবে না।
এখন বলি কিভাবে আপনিও ঠিক ২০০০ টাকা না হলেও অন্তত ভালো একটা উপার্জন করতে পারেনঃ
- ফেসবুক ভিডিও ক্রিয়েটিংঃ
Facebook Video Creator:https://www.facebook.com/creatorstudio/
আপনার এটির জন্য ফেসবুকে একটি পেইজ থাকতে হবে ১০০০০ ফলোয়ারস সহ এবং আপনি যদি ভিডিও ভালো তৈরি করতে পারেন তবে ৩ মিনিটের ভিডিও আপনার সেই পেজে আপলোড করার মাধ্যমে ফেসবুক মনিটাইজেশন পেতে পারেন। তবে মনিটাইজেশন এর আবেদন করার জন্য অবশ্যই গত দুই মাসে ৩০০০০ এর বেশি ভিডিও ওয়াচটাইম থাকতে হবে এবং ভিডিও কপিরাইট মুক্ত থাকতে হবে৷
- ই-কমার্সঃ
Facebook E-shop:About Facebook Page Shops
বলবেন ই-কমার্স আবার ফেসবুকে কেন! তো বলি ওয়েবসাইট এর মতোই ফেসবুকও আপনাকে ই-কমার্স / ই-শপের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আপনার পাশাপাশি কোনো বিশ্বস্ত পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে যদি তাদেরকে আশ্বস্ত করতে পারেন যে তাদের পণ্য বিক্রিতে আপনি আপনার ফেসবুক গ্রুপ / পেইজের মাধ্যমে অনেকটাই সহায়তা করতে পারবেন তো ই-কমার্স করার জন্য আর কোনো অসুবিধা থাকবে না। এজন্য আপনার ভালো কোনো ফেসবুক পেইজ অথবা গ্রুপ থাকলে আপনি ই-কমার্স শপ তৈরি করে নিতে পারেন।
- আমাজন অ্যাফিলিয়েট / অন্যান্য অ্যাফিলিয়েটঃ
Amazon Influencer/Affiliate:Amazon Influencer Program আপনি যদি ভারতের নাগরিক হন তো আমাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ফেসবুকের মাধ্যমে করতে পারেন৷ এক্ষেত্রেও ভালো কোন প্রোডাক্ট পেইজ তৈরি করে নিতে হবে। আর যদি ভালো কোনো ফেসবুক পেইজ থেকেই থাকে তবে আমাজনের ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে অনেক অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। এছাড়াও অন্যান্য অনেক বড় সাইট আছে অ্যাফিলিয়েশন এর জন্য। দেখুন আমি বাংলাদেশি বিধায় আমাকে আমাজন যুক্তরাষ্ট্র বেছে নিতে হয়েছে কিন্তু ভারতীয় হলে আমাজন ইন্ডিয়া থেকে অনেক বেশি সুবিধা হত। আমার আমাজন শপের একটা চিত্র দিলামঃ
Link: Live Product’s’s Amazon Page
- ফেসবুক ইন্সট্যান্ট আর্টিকেলঃ
Facebook Instant Articles: Homepage
এক্ষেত্রে আপনার যদি কোনো ব্লগ ওয়েবসাইট থাকে তবে সেই ওয়েবসাইটের সাথে ফেসবুক পেইজ সংযুক্ত করে ফেসবুক অডিয়েন্স নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে ফেসবুক পেইজ বিজ্ঞাপন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এমনকি এটা মোটা অংকের অর্থ প্রদান করে।
- ফেসবুক গেমিংঃ
Facebook Gaming Video Creator:
Watch Live Video Game Streaming
ইদানীং গেমিং টা অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে। ফেসবুকও গেমারদের জন্য পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। এক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইনে গেইম খেলতে হবে এবং সেটা সরাসরি ফেসবুক এ লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে। অনেক বেশি সুবিধা প্রদান করে গেমার দের জন্য৷
জানিনা উপরের আইডিয়া গুলা আপনার ক্ষেত্রে কতটা উপযুক্ত হবে। পরিশ্রম করলে সব জায়গা থেকেই আপনি নতুন নতুন সম্ভাবনা গড়ে তুলতে পারেন। সময় তো লাগবেই। আজকেই যে দুই হাজার টাকা উপার্জন করা শুরু করতে পারবেন এমনটা তো নয়। পরিশ্রম করলে দিনে লাখ টাকাও উপার্জন সম্ভব।
আমরা বলি ” আমি বেকার! আমার অর্থের অভাব! “, কিন্তু এদিকে শুধু অকারণেই সময় নষ্ট করি। একটু কাজে লেগে থাকলেই আজ লক্ষ বেকার আপনার পিছনে ছুটতো।
কোনোরকম সমস্যা থাকলে অবশ্যই জিজ্ঞাসা করবেন।