হস্থমৈথুন বন্ধ করার জন্য হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেলে কি ভবিষ্যতে কোনও ক্ষতি হবে? এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি আছে?
“হস্তমৈথুন একটি কু-অভ্যাস এর কারনে ছেলেমেয়েরা জীবনের শুরুতেই যে ক্ষতি করে তাহা বলে শেষ করা যাবে না।এই সর্বনাশা অভ্যাসের ফলে শরীরের যে ক্ষতি হয় তার ফলে শারীরিক ও মানসিক উভয় শক্তিই হারায়।দেহ জীর্ণশীর্ণ হয়। যৌবনের লাবন্য হারানোর ফলে ক্ষুধামন্দা,বিষন্নতা,উদাসীনতা প্রভৃতি উপসর্গ দেথা দেয়।যদি কোন কিশোর কিশোরীকে এই কুফলের কথা আমরা বুঝাতে পরি তবে অনেক সহজেই হস্তমৈথুনের মত কু-অভ্যাস হতে রক্ষা করতে পারব।”
কারণ সমুহ:
উপযুক্ত শিক্ষার অভাব,অসৎসঙ্গ, বা বন্ধুদের কুপ্ররোচনা, লিঙ্গের চর্মে চুলকানী ইত্যাদি কারনে হস্তমৈথুনে অভ্যস্ত হয়।শিশুকালে প্রথমে নিজের অজান্তেই যৌনাঙ্গে হাত দিতে দিতে মনের মাঝে আনন্দ উপলদ্ধি করে।এক ধরনের সুখানুভুতি থেকে শুরু করে।একদিন কিশোর-কিশোরীগন ক্ষণিক সুখ লাভের প্রত্যাশায় ইহাতে অভ্যস্হ হয় এবং ক্রমে ক্রমে ইহা কু-অভ্যাসে পরিণত হইয়া তাহাদের স্বাস্থ্য ক্ষয় করিয়া থাকে।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধসমুহের লক্ষণভিত্তিক আলোচনা :
অরাম মেট:
অতিরিক্ত হস্ত-মৈথুনের কুফলে স্বপ্নদোষ, অনৈচ্ছিক রেতঃপাত, ধাতুদৌর্বল্য ও ধ্বজভঙ্গ এইরুপ নানা দুর্বলতা,জীবনের প্রতি ঘৃণা অত্ম হত্যার ইচ্ছা অর্থাৎ আরাম মেটের সকল লক্ষণ যখন এসে যায় তখন অরাম মেট প্রয়োগ জরুরী।
ক্যালকেরিয়া কার্ব :
হস্তমৈথুনের কুফল দুরকরে ক্যালকেরিয়া কার্ব যৌনশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ।বিশেষত মোটা,থলথলে স্বাস্থ্যের অধিকারী লোকদের বেলায় এটি ভালো কাজ করে।সাধারণতঃ নাক্স ভমিকা ও সালফারের পরে ব্যবহৃত হয়।অত্যধিক সঙ্গম অহেতুক ইচ্ছা, সঙ্গমকালে লিঙ্গ সম্পূর্ণ দৃঢ় হয় না,উপযুক্ত সময়ের পূর্বে অথবা অসম্পূর্ণ রেতঃস্খলন হয়।সঙ্গমের পর ঘর্মস্রাব,সঙ্গমের পর দৈহিক ও মানসিক দুর্বলতা দেখা দিলে ক্যালকেরিয়া কার্ব প্রয়োজন হয়।
সিঙ্কোনা বা চায়না :
অত্যধিক রেতঃক্ষয়বশতঃ দুর্বলতা হজম শক্তির অভাব,অত্যন্ত দুর্বল এই সকল লক্ষণ সমষ্টি যে রোগীর মাঝে দেখা দেয় তার পরম বন্ধু চায়না।
ডায়োস্কোরিয়া :
লিঙ্গ এরূপ শিথিল হইয়া পড়ে যে, এক রাত্রেই ২/৩ বার স্বপ্নদোষ হয় এবং তৎপর দিন রোগী দুর্বলতা অনুভব করে, বিশেষতঃ জানুদ্বয় বিশেষ দুর্বল হইয়া পড়ে সেই রোগীর জন্য এই ঔষধটি অতিজরুরী।
লাইকোপোডিয়াম:
হস্ত-মৈথুনের ফলে সম্পূর্ণ ধ্বজভঙ্গ।লিঙ্গ উত্থান আদৌ হয় না বা আংশিক হয়।লিঙ্গ শীতল ও ছোট।স্ত্রী সহবাসে অক্ষম।সেই রোগীর পেটফাপাসহ লাইকোপোডিয়ামের লক্ষণ সমষ্টি দেখা দিলে অত্যন্ত কার্য়করী।
নাক্স ভুমিকা :
ইহা হস্ত-মৈথুনের কুফলের প্রথম অবস্থায় শ্রেষ্ঠ ঔষধ।রোগীর শিরঃপীড়া, রাত্রিকালে বিশেষতঃ সকালের দিকে প্রায়ই অনৈচ্ছিক রেতঃক্ষয়।ইহাতে উন্নতি ক্ষান্ত হইলে প্রায়শঃ সালফার নির্দিষ্ট হইবে এবং তৎপরে ক্যাল্কেরিয়া কার্ব ও লাইকোপোডিয়াম।
এসিড ফসঃ
অত্যধিক ইন্দ্রিয়পরায়ণতার দূরবর্তী কুফলে ইহা (তরুণ অবস্থায় – সিঙ্কোনা )বিশেষ উপযোগী।সম্পূর্ণ দেহ দুর্বল বোধ হয় ;রোগী শিরোঘূর্ণন বশতঃ মনে করে সে পড়িয়া যাইবে,শয়ন করিয়া থাকিলে সে মনে করে যে তাহার পদদ্বয় ঊর্ধ্বে উঠিতেছে।তাহার জননেন্দ্রিয় সমূহ শিথিল হইয়া ঝুলিয়া পড়ে।সঙ্গম কালে অতিসত্বর বীর্যপাত।প্রস্রাব অথবা মলত্যাগ প্রচেষ্টায় রেতঃস্খলন হয়।লিঙ্গ আদৌ উত্থিত হয় না বা অসম্পূর্ণ ভাবে উত্থিত হয়।রোগী তাহার অণ্ডকোষের উপর পিপীলিকা সঞ্চালনানুভুতি অনুভব করে ।পদদ্বয় ও পৃষ্ঠদেশ অতিশয় দুর্বল, চলিতে গেলে থর থর করিয়া কম্পিত হয়।
ষ্টেনাম মেট:
হস্ত-মৈথুনের কুফলে পক্ষাঘাত হলে সেই পক্ষাঘাতের রোগীর চিকিৎসায় ষ্টানাম মেট জরুরী।
ষ্টেফিসেগ্রিয়া:
ইহা স্ত্রীলোক ও পুরুষদিগের হস্ত-মৈথুনের কুফলে অপর একটি শ্রেষ্ঠ ঔষধ ।পুরুষদিগের অতিশয় শীর্ণতা, চক্ষুর চতুর্দিকে কালিমা চক্র, বিবর্ণ ও পিঙ্গলাভ মুখ, বিশেষ লাজুক ও খিটখিটে প্রকৃতির এবং বিষণ্ণ ।নিঃসঙ্গতা ভালবাসে এবং স্ত্রীলোক সম্বন্ধে লাজুক।স্ত্রীলোকদিগের গর্ভাশয় বা ডিম্বকোষ সংক্রান্ত লক্ষণাদি।
সালফার :
ইহা প্রায়শই নাক্স ভমিকার অনুপূরক।ইহার রোগী দুর্বল ও ক্ষীণ এবং তৎসহ পাকাশয়িক লক্ষণাদি দেখা দেয়।রোগীর মূর্ছার ভাব,উত্তাপের ঝলক,হাত পা ঠান্ডা এবং মাথায় উত্তাপ বোধ।বীর্য ক্ষীণ ও জলবৎ এবং গন্ধশূন্য প্রায়ই রাত্রিকালে অনৈচ্ছিক রেতঃস্খলন এবং তাহার ফলে রোগী প্রাতঃকালে অবসন্ন হইয়া পড়ে।লিঙ্গাদি শিথিল, কচিৎ উত্থিত হয় ।লিঙ্গ-মুণ্ড শীতল।সঙ্গমের চেষ্টা করিলে অতি শীঘ্র,পায়ই স্পর্শ মাত্র,রেতঃস্খলিত হয়।
জিঙ্কাম মেট :
জননেন্দ্রিয় মধ্যে স্থানীয় উত্তেজনা ,বীর্যস্খলনে নিবৃতি ইত্যাদি লক্ষন বিবেচনায় জিঙ্কাম মেট উপযোগী।
কোবাল্টাম:
খনিজ ধাতব উপাদান হতে তৈরী একটি সদৃশ ঔষধ। যাহা কোমর বেদনার সদৃশ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।তবে বিশেষ করে স্ত্রীসহবাসের পরে বা স্বপ্নদোষের পরে কোমর বেদনা হলে ব্যবহৃত হয়।রোগীর যদি বসিয়া থাকলে বেদনা বৃদ্ধি পায় এবং দাড়াইলে,চলাফেরা করিলে ও শুইয়া থাকলে আরাম বোধ করে তবে কোবাল্টাম উপযুক্ত ঔষধ।
জেলসিমিয়াম :
রোগীর সঙ্গম-শক্তি বিশেষ ভাবে (প্রায় ধবভঙ্গের মত) হ্রাস হইয়া পড়ে।রাত্রিকালে লিঙ্গাদির শিথিলতাসহ, কামোত্তেজনা ব্যতীত প্রায়ই অনৈচ্ছিক রেতঃপাত এবং প্রায়ই অণ্ডকোষে শীতল ঘর্মের উদ্ভব হয়।
প্ল্যাটিনা : বিষণ্ণ ও মন মরা প্রকৃতির,শীর্ণতা,মৃগীরোগের ন্যায় আক্ষেপ বা খেঁচুনি।প্রায়ই সজ্ঞান থাকে ; চক্ষু কোটরাগত এবং হরিদ্রাভ চর্ম,মুখ বিবর্ণ ও চুপসান।কিশোরদিগের হস্ত-মৈথুনের কুফলে ইহা একটি বিশিষ্ট ঔষধ।
ক্যালাডিয়াম সেগা:
অতিরিক্ত হস্ত-মৈথুনের ফলে লিঙ্গ শিথিল হইয়া পড়ে।লিঙ্গ-মুণ্ডের চর্মের ঈষৎ উম্মুক্ত করিলেও তাহা তৎস্থানেই অবস্থান করে,স্বয়ং সঙ্কুচিত হয় না।রাত্রিকালে স্বপ্নে অথবা বিনা স্বপ্নে কামোত্তেজনা ব্যাতিরেকে রেতঃস্খলন।বালিকাদিগের যোনিমধ্যে ক্রিমি প্রবিষ্ট হইয়া তাহাদের উত্তেজনায় হস্ত-মৈথুনের চিকিৎসায় ইহা শ্রেষ্ঠ ঔষধ।হস্ত-মৈথুনের পর মানসিক অবসাদ এবং পদদ্বয়ের দুর্বলতা।হস্ত-মৈথুনের ফলে মুখে-ব্রুণ।
হস্তমৈথুন পুরুষের একটি কু-অভ্যাস।এটি একটি জঘন্য অভ্যাস।এ অভ্যাসটি ত্যাগ করা জরুরী।এর কুফলে নপুংশক হয়ে যাবেন।পুষ্টিকর আহার ও সুচিকিৎসা নিলে এ রোগ মুক্তিতে হতাশার কোন করন নেই।সহজেই আরোগ্য হয়।মনে রাখতে হবে যেখানে সেখানে অপচিকিৎসা দ্বারা যাতে ক্ষতিগ্রস্হ না হন।রাস্তার পাশে চটকদার কোন পোষ্টার দেখে ভন্ড প্রতারকদের হাতে পরে হাজার হাজার রোগী ক্ষতিগ্রস্হ হয়।ভুলেও এ দের হাতে রোগ চিকিৎসার জন্য যাবেন না।যারা ভুলে হস্তমৈথুনের অভ্যাস করেছেন আজই ইহা ত্যাগ করুন।আর যারা ক্ষতিগ্রস্হ হয়েছেন শীঘ্র হস্তমৈথুন ত্যাগ করার পাশাপাশি একজন দক্ষ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিন।