ঘাড়ে ব্যাথা হলে করনীয় কি?
আমাদের দেশে ঘাড় ব্যথা নিয়ে প্রায়ই লোকজন আসে। আমাদের অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি, ঘাড় ব্যথা সামান্য কারণেও হতে পারে, আবার গুরুতর কারণেও হতে পারে। একটি কারণ হলো পশচার। এর মানে হলো ভঙ্গি। যে ভঙ্গিতে আমরা বসি, যে ভঙ্গিতে আমরা ঘাড়কে পরিচালনা করি, সেটি। তবে এগুলো জানার আগে আমাদের জানতে হবে ঘাড়ে কী কী রয়েছে। ঘাড়ে রয়েছে সাতটা হাড়। এর ভেতর দিয়ে স্পাইনাল কর্ড গেছে, একে মেরুরজ্জু বলে এবং তার থেকে অন্যান্য স্নায়ুগুলো গেছে। আর এই হাড়গুলো একটি আরেকটির সঙ্গে কাপড়ের মতো, কিন্তু শক্ত, লিগামেন্ট দিয়ে আটকানো রয়েছে। বেশ কয়েকটি লিগামেন্টগুচ্ছ রয়েছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে অসুবিধা হলে, ঘাড় ব্যথা হতে পারে। পেশিতেও হতে পারে। ভাসকুলার পেইন হতে পারে।
এ ছাড়া, আরো তিনটি জিনিস রয়েছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো থাইরয়েড, আরেকটি হলো প্যারাথাইরয়েড, টনসিল। এগুলোতেও ব্যথা হলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
আমরা প্রথমেই দেখি যে ঘাড় ব্যথা নিয়ে কারা আসে? যারা ঘুমানোর সময় একটু অন্যভাবে ঘুমায়, বসার সময় অন্যভাবে বসে তারা আসে। যারা অনেকক্ষণ বসে, একইভাবে বসে কাজ করে, তাদের ঘাড়ব্যথা হয়।
আরেকটি জিনিস দেখা যায়, এখন সবার হাতে একটি টেলিফোন রয়েছে। সেই টেলিফোনে যখন কথা বলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলছে, ঘাড় কাত করে কথা বলছে, রাস্তা পার হচ্ছে, কথা বলছে, গাড়িতে ওঠে কথা বলছে। এই যে ঘাড় বাঁকানো, এই অভ্যাসটি থেকেও ঘাড় ব্যথা হয়। দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা ল্যাপটপ চালালেও একই সমস্যা হতে পারে। একে বলে ব্রাউজ সিনড্রম। দুই ঘণ্টার বেশি যদি কম্পিউটার দেখতে থাকে, তাহলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
আসলে একটি অবস্থায় আমরা বেশিক্ষণ থাকি না। দেখা গেছে, কয়েক মিনিট পর পর আমাদের ভঙ্গি বা অঙ্গবিন্যাস কিছুটা পরিবর্তন হয়। এটা নিজে থেকেই হয়। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের মস্তিষ্ক।
এই ব্যথাগুলো হলে অনেক সময় আমরা তেল মালিশ করি, গরম স্যাঁক দেই, তা ভালো। ভালো হয়ে গেলে ভালো। তবে এটি অনেকদিন ধরে থাকলে, দেরি করা উচিত নয়। এক সপ্তাহের বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।