সকালে উঠে খালি পেটে কোন কোন খাবার বা পানীয় সেবন করা সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর?
সবথেকে স্বাস্থ্যকর হলো জল। মুখ না ধুয়ে অন্তত এক লিটার জল, যদি সম্ভব হয় তাহলে একটু উষ্ণ হলে খুবই ভালো, তা না হলেও চলবে, কিন্তু খেতে হবে খুব আস্তে আস্তে। এই কাজটা যত সম্ভব ভোর বেলা মানে ভোর ৩:৩০ টার পর যে কোনো সময় করতে পারলে ভালো। সারাদিনে মানে, ভোরবেলা থেকে রাত ৮:৩০ পর্য্যন্ত প্রায় ৪ লিটার জল শরীরে গেলে ভালো।
এরপর লেবুর রস খেয়ে নিতে পারেন। চারটি লেবুর রস সামান্য জলে টিপে নিন। ভুল করেও আগে লেবুর রস গ্লাসে নেবেন না। লেবুর রস যেন সোজা জলে গিয়ে পড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে, তা না হলে এ্যসিডিটি হবে। এরপর অন্তত এক ঘন্টা কিছুই না খাওয়া খুবই ভালো।
যাদের পেট পরিষ্কার হয় না তারা রাতে ভিজিয়ে রাখা তেঁতুলের জল খেতে পারেন।তবে এতে আপনার সারাদিনই একটু গ্যেসের সমস্যা হতে পারে কয়েক দিন।
এরপর আপনি শশা খেতে পারেন।খালি পেটে শশা অমৃত।(তবে নুন মাখালে নয়)। সঙ্গে যে কোনো রকমের ফল খেতে পারেন। পেয়ারা খেতে পারেন। পেয়ারা গুনে ফলের রাজা হওয়া উচিত। সঙ্গে স্প্রাউটস খেতে পারেন। সবুজ মুগ ডালের স্প্রাউটস। গত রাতে ভিজিয়ে রাখা কালো ছোলা, কাঠ বাদাম(৮) কিশমিশ(১২) কাজু(৪) আখরোট (২)। ড্রাইফ্রুট যত ভিজিয়ে খাবেন, অন্তত কয়েক ঘন্টা ভিজিয়ে খাবেন, তত লাভ হবে।
যদি আপনি মহিলা, এবং বিশেষ করে ৩৫ বৎসর বয়স পেরিয়ে যাচ্ছেন তাহলে আপনি, সাদা তিল + তিসি + পোস্ত, সমান পরিমানে(১ চামচ) মিশিয়ে, পেস্ট করে খেতে পারেন। এতে যাদের গায়ে জোর পান না, হাঁটুতে, হাঁড়ে ব্যথ্যা ইত্যাদি আছে তারা প্রচন্ড ভাবে উপকৃত হবেন। এটা পুরুষরাও অবশ্যই খেতে পারেন। এর কোনো স্বাদ হয় না। মহিলারা এটি দিনে দু বার এক এক চামচ করে খেতে পারেন। একবারে পেস্ট করে কয়েক দিনের জন্য করে রেখে দিতে পারেন।
সকালের খাওয়ায় যত ফল থাকবে, তত ভালো। ফল বা ফলের রস (পুরো ফল হলেই ভালো) সকালে খেলে বেশী উপকৃত হবেন। সূর্য্যাস্তের পর ফল না খেলেই ভালো। যাদের কিডনির সমস্যা আছে বা স্টোনের সমস্যা আছে তাদের বাদ দিয়ে, কাঁচা টমেটো (দেশী) খেলে লাঙ্গস পরিষ্কার হবে।
যাদের বার বার স্টোনের ধাঁচ আছে, তারা কুল্থি কলাই ডালের জল সকালে খেতে পারেন। এতে স্টোন তৈরী হওয়ার প্রবণতা কমে আসবে।
যদি আপনি ডায়বেটিক তাহলেও আপনি গাজর বা কলা খেতে পারেন। গাজর রান্না করার আগে পর্য্যন্ত মানে কাঁচা গাজর বা তার রস, আপনার সুগার বাড়াবে না। তেমনি পাকা কলা, যা প্রায় কালো হয়ে এসেছে, যাকে চলিত ভাষায় বলা হয় মজে যাওয়া কলা, এমন কলাকে মুখে রেখে রেখে খেলে সুগারে লাভ হবে।
যদি করলার রস ও আমলকির রস মিশিয়ে সকালে খান তাহলেও উপকৃত হবেন।
যদি রাতে এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে রাখা ঢেঁড়স (ভিন্ডি) চটকে চাবিয়ে খেয়ে তার জলও খেয়ে নেন, তাহলেও সুগারে লাভ হবে। এতে শরীরে বীর্য্য যথেষ্ট পরিমানে তৈরী হবে।
এগুলির সাথে আপনি নিজের স্বাভাবিক রুটি তরকারী খেতেই পারেন। তবে নুনের পরিমাণটা যতটা কম রাখতে পারেন, তত বেশী ভাল।
দুপুরে আপনি যা খান তার সাথে, খাওয়ার শেষে একটু ঘোল, লস্সি ইত্যাদি অবশ্যই খেয়ে নিন। এতে আপনি খুবই উপকৃত হবেন।
ডাল ও পনীরের তরকারি একই বেলায় এক সময়ে খাবেন না। বিশেষ করে যদি আপনার রক্তের গ্রুপ B+ হয়ে থাকে। এতে আপনার মেদ বাড়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
কাঁচা পেয়াজ খাওয়া খুবই ভালো। কাঁচা রসুন খাওয়া অত্যন্ত লাভদায়ক। কিন্তু কিছুতেই দুটিকে এক সঙ্গে কাঁচা খাবেন না। এতে বিষকৃয়া হবে।
বিকেলের দিকে ফল খেয়ে নিতে পারেন কিন্তু সূর্যাস্তের আগে। ফলের রসও খেয়ে নিতে পারেন তবে সকালের পরিমানে কম খাবেন। পাকা পেঁপে বা আম ( যেই ফল হলুদ) ইত্যাদি ভালো। দুপুরের পর শশা খাবেন না। এতে উপকারের অনুপাতে অপকার অনেক বেশী হবে।
ব্যক্তি বিশেষের জন্য এটি আলাদা আলাদা হয়। তবে যা প্রায়ত সকলেই করতে পারেন তার উল্লেখ করলাম।
যারা আগেই কোনো ডাক্তারের চিকিত্সায় আছেন, তারা তার পরামর্শ ছাড়া নিজের খাওয়া দাওয়ার পরিবর্তন করবেন না।
সু-সাস্থ্যের চাবি কাঠি হলো ৭০% ই খাওয়া দাওয়া ও ৩০% ব্যায়াম।