স্বপ্নদোষ বন্ধ করার উপায় কী?
স্বপ্নদোষ বা রাত্রে ধাতুনির্গমন হ’ল একটি অবস্থা যেখানে কিছু পুরুষের ঘুমের মধ্যে, ভোরের দিকে বা গভির রাতে বীর্যপাত ঘটে। এই সমস্যাটা বেশি গুরুতর হয়ে যায় যদি সেই পুরুষের লিঙ্গের পেশির বা স্নায়ুর দুর্বলতা থাকে অতীতে ঘটে যাওয়া কোনও কারণের জন্য যেমন অত্যাধিক হস্তমৈথুন, বীর্যের ঘনত্ব কমে যাওয়া, হরমোনের সমস্যা বা ভর্তি হয়ে যাওয়া মুত্র থলি। সাধারণত, পুরুষরা বীর্য ধরে রাখতে সক্ষম হন, কিন্তু যখন বীর্যের মাত্রা বেশি হয়ে যায়, তখন তা ধরে রাখা যায় না এবং গভির রাতে ধাতুনির্গমন হয়। অত্যাধিক বীর্যপাত ও স্বপ্নদোষের ক্ষেত্রে, একজন পুরুষের শরীরে অনেক কিছু হতে পারে যেমন রাতে ঘুম না আসা, ঝিমোনো, দুর্বলতা, স্মৃতিভ্রংশ, দেখতে না পাওয়া, হাঁটুর ব্যথা, দুর্বল যৌন ক্ষমতা, বন্ধাত্য, লিঙ্গ শিথিলতা এবং শারীরিক ধকল। কিছু বিরল ক্ষেত্রে, বীর্যের সাথে মূত্রত্যাগও হতে পারে।
স্বপ্নদোষের প্রতিকার :
এটা বিশ্বাস করা হয় যে স্বপ্নদোষের প্রতিকার করতে জীবনধারায় বদল আনা দরকার এবং ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া উচিত। জীবনধারায় বদল আনার পাশাপাশি হস্তমইথুনের পৌনঃপুনিকতা কমানো এবং নিষিদ্ধ চলচ্চিত্র ও ছবি দেখা বন্ধ করতে হবে। যদিও, প্রাকৃতিক উপায়ে স্বপ্নদোষ বন্ধ করার কয়েকটি উপায় আছে; নিচে লেখা পরামর্শগুলো মেনে চলতে হবে।
১.ধ্যান করলে মনোযোগ বাড়ে আর অভ্যন্তরীণ অনুভূতিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এর ফলে পুরুষরা অযাচিত কিছু কাজ করার থেকে নিজেদের আটকাতে পারবেন এবং এটি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার জন্য ভীষণ উপকারি।
২.ব্যায়াম এবং যোগাসন একজন পুরুষকে তার শরীর, মন ও মস্তিষ্কের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রন রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত যোগাসন ও ব্যায়াম করলে সেসব যৌনকর্ম যা করলে স্বপ্নদোষ হতে পারে, আপনি তা নিজে আটকাতে পারবেন।
৩.রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে গন্ধসার তেল দিয়ে স্নান করলে আপনার শরীর অনেক আরাম পাবে এবং আপনি শান্তি মনে ঘুমোতে পারবেন।
৪.আপনার খাদ্যাভ্যাসে বদল আনলেও স্বপ্নদোষ রুখে দেওয়া যায়। যেসব পুরুষের স্বপ্নদোষ হয়, তারা আম্লিক খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিন।
৫.এর পরও যদি রাত্রে ধাতুনির্গমন বন্ধ না হয় তো আপনাকে সেক্সোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসার দ্বারা স্বপ্নদোষের মূল কারণ যেটা সেটার নিরাময় করে আপনার হারানো শারীরিক শক্তি ও যৌনক্ষমতা ফেরত পাবেন।
স্বপ্নদোষের প্রতিকার করা সহজ এবং এটির চিহ্নিতকরণ করা অত্যন্ত জরুরি যাতে পুরুষের যৌন-জীবন ব্যাহত না হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিচে লেখা ঘরোয়া পদ্ধতিগুলোও ব্যবহার করা যেতে পারে :
১. লাউয়ের মধ্যে শরীর ঠাণ্ডা করার গুনাগুণ রয়েছে এবং তা শরীর গরম হতে দেয় না তাই স্বপ্নদোষ রুখতে পারে। এটা দু’ভাবে ব্যবহার করতে পারেন; রাত্রে শোয়ার আগে লাউয়ের জুস্ খেতে পারেন অথবা তিলের তেলের সাথে মিশিয়ে এটিকে মালিশ করে নিন।
২. বৈঁচি বা আমলার রস শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এক গ্লাস বৈঁচি ফলের রস খেলে স্বপ্নদোষের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
৩. পেঁয়াজ এবং রসুনের শারীরিক নানারকম অসুস্থতা সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে বলে জানা যায়। ৩ থেকে ৪ কোয়া কাঁচা রসুন আর পেঁয়াজ যদি স্যালাড হিসেবে খাওয়া যায় তবে স্বপ্নদোষ কমে যেতে পারে।
৪. আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা অ্যালমন্ড, কলা ও আদা যদি দুধে মিশিয়ে খাওয়া যায় তবে রাত্রে ধাতুনির্গমনের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কলার মধ্যে শরীর ঠাণ্ডা করার গুণ রয়েছে যা এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, দই খেলেও এই সমস্যার হাত থেকে উপসম পেতে পারেন কারণ দইও শরীর ঠাণ্ডা রাখে আর রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
৫. সেলেরি বা মেথির রস অকাল বীর্যপাত ও স্বপ্নদোষের ক্ষেত্রে ভীষণ কার্যকরী। সেলেরি ও মেথির রস ২:১ অনুপাতে মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।