কেউ হঠাৎ বিষ খেলে, তৎক্ষণাৎ কী করলে সে প্রাণে রক্ষা পাবে?
বিষ খেলে কি করনীয় এবং বিষ খেলে প্রাথমিক চিকিৎসা কি তা আমরা অনেকে জানি না। যার ফলে, বিষ খাওয়া রোগীকে নিয়ে পরতে হয় বিপাকে। দুর্ঘটনাবশত কিংবা অজ্ঞতা বশত অনেক সময় মানুষ বিষ খেয়ে থাকে। আবার অনেকে আত্মহত্যার জন্য বিষ খেয়ে থাকে।
দুর্ঘটনাবশত সাধারণত কেরোসিন, পেট্রোল, সোডা ইত্যাদি তরল দ্রব্য মানুষ খেয়ে থাকে। এছাড়া, শিশুরা অসাবধানতার বশে বিভিন্ন ক্ষতিকর তরল দ্রব্য খেয়ে ফেলে। মাঝে মাঝে আবার ইনজেকশনের মাধ্যমেও বিষক্রিয়া ঘটে তাকে। গ্রামের দিকে অবশ্য কীটনাশক জাতীয় বিষ খেয়ে মৃত্যুর পরিমাণ বেশি।
সুয়ারেজের বিষাক্ত গ্যাস, গভীর অব্যবহৃত কূপের বিষাক্ত গ্যাস, অগ্নিকুণ্ডের ফলে তৈরি এক ধরনের বিষাক্ত গ্যাসের কারণে অনেক ক্ষেত্রে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু ঘটে। গ্যাস জাতীয় বিষ শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে ভেতরে ঢুকে মৃত্যু ঘটায়।
বিষ খেলে কি করনীয় এবং বিষ খেলে প্রাথমিক চিকিৎসা কি তা আমরা অনেকে জানি না। যার ফলে, বিষ খাওয়া রোগীকে নিয়ে পরতে হয় বিপাকে। দুর্ঘটনাবশত কিংবা অজ্ঞতা বশত অনেক সময় মানুষ বিষ খেয়ে থাকে। আবার অনেকে আত্মহত্যার জন্য বিষ খেয়ে থাকে।
দুর্ঘটনাবশত সাধারণত কেরোসিন, পেট্রোল, সোডা ইত্যাদি তরল দ্রব্য মানুষ খেয়ে থাকে। এছাড়া, শিশুরা অসাবধানতার বশে বিভিন্ন ক্ষতিকর তরল দ্রব্য খেয়ে ফেলে। মাঝে মাঝে আবার ইনজেকশনের মাধ্যমেও বিষক্রিয়া ঘটে তাকে। গ্রামের দিকে অবশ্য কীটনাশক জাতীয় বিষ খেয়ে মৃত্যুর পরিমাণ বেশি।
সুয়ারেজের বিষাক্ত গ্যাস, গভীর অব্যবহৃত কূপের বিষাক্ত গ্যাস, অগ্নিকুণ্ডের ফলে তৈরি এক ধরনের বিষাক্ত গ্যাসের কারণে অনেক ক্ষেত্রে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু ঘটে। গ্যাস জাতীয় বিষ শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে ভেতরে ঢুকে মৃত্যু ঘটায়।
বিষ খেলে কি করনীয়
পূর্বে আমরা আগুনে পুড়ে গেলে কি করবেন এবং পানিতে ডুবে গেলে করণীয় ও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত বলেছি। আজকের এই লেখায় এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। বিষক্রিয়া এবং বিষ খেলে কি করনীয় তা নিচে তুলে ধরা হল।
বিষ প্রয়োগের কারণ
- আত্মহত্যার জন্য
- অন্যকে হত্যার জন্য
- দুর্ঘটনা বশত
- অজ্ঞতা বা অসাবধানতার কারণে যা শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়।
বিষ প্রয়োগের মাধ্যম
- খাওয়ার মাধ্যমে সাধারণত মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ, আর্সেনিক, কেরোসিন, ধুতুরা, মাত্রাতিরিক্ত মাদকদ্রব্য ইত্যাদি।
- ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষক্রিয়া দ্রব্য শরীরে পুশ করা হয়।
- শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে যা কিনা ভূমিকাতে উল্লেখ করা হয়েছে।
- জমিতে দেওয়া কীটনাশকের মাধ্যমে।
সাধারণত যে বিষগুলোর কারণে অধিক মৃত্যু ঘটে থাকে
- ইঁদুর মারার বিষ।
- যে কোনও ওষুধ মাত্রাধিক সেবন।
- কেরোসিন, ডিজেল কিংবা পেট্রোল খেলে।
- আর্সেনিক আক্রান্ত হয়ে বিষক্রিয়া।
- ডি. ডি. টি. কিংবা অন্য কোনও কীটনাশক ওষুধের জন্য।
- ধুতুরার বিষ প্রয়োগে৷
- মদ, গাজা কিংবা হিরোইন ইত্যাদি মাত্রাতিরিক্ত সেবন করে ফেললে।
- উগ্র ক্ষার কিংবা কড়া এসিড।
- বিভিন্ন বিষোধক দ্রব্য।
- অতিরিক্ত ধূমপান করলে।
বিষ খেলে প্রাথমিক চিকিৎসা
বমি করানোর চেষ্টা করা
বিষ খেলে যদি লোকটির জ্ঞান থাকে তবে বমি করানোর চেষ্টা করা উচিত। রোগীর গলায় আঙ্গুল ঢুকিয়ে বমি করাতে হবে। এক্ষেত্রে রোগী নিজে আঙ্গুল প্রবেশ করাতে পারে। আর রোগী অক্ষম হলে চিকিৎসা-দাতা চেষ্টা করবে। অথবা যে পদ্ধতিতে সে বমি করবে সে পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
লবণ মেশানো গরম পানি, ডিমের সাদা অংশ কিংবা কাচা সরষের তেল খাইয়েও বমি করানো যায়।
বমি করানোর সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বমি ফুসফুস বা শ্বাসনালীতে প্রবেশ না করে। সেজন্য রোগীর মাথা কিছু নিচের দিকে কাত করে রাখতে হবে।
যে-সব ক্ষেত্রে বমি করানো যাবে না
- অজ্ঞান অথবা শক-প্রাপ্ত রোগী হলে।
- এসিড, ক্ষার, কেরোসিন, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি জাতীয় বিষক্রিয়া হলে।
বিভিন্ন রকম বিষের প্রাথমিক চিকিৎসা
এসিড জাতীয় বিষ – রোগী যদি এসিড খেয়ে থাকে তবে রোগীকে প্রচুর পরিমাণে পানি, দুধ, ডিমের সাদা অংশ ইত্যাদি খাওয়াতে হবে । রোগী যদি সাথে সাথেই বমি করে তখন বিপদ কমে গিয়েছে মনে করতে হবে । কারণ কড়া এসিড তখন দ্রবীভূত হয়ে দুর্বল হয়ে যায়।
গ্যাস জাতীয় বিষ – রোগী যদি গ্যাস জাতীয় বিষ দ্বারা আক্রান্ত হয় তবে প্রথমেই রোগীকে খোলামেলা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। রোগীর পরিধেয় বস্ত্র টিলা করে দিতে হবে। শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে কৃত্রিম উপায়ে চালিয়ে যেতে হবে।
এলকালি বা ক্ষার জাতীয় বিষ – এলকালি কিংবা ক্ষার দ্বারা বিষক্রিয়া ঘটলে প্রচুর পানি, দুধ এবং টক জাতীয় সরবত যেমন- লেবুর সরবত, কমলার রস ইত্যাদি খাওয়াতে হবে। এগুলো খাওয়ার পর যদি রোগী বমি করে তবে বিপদ অনেকটা কেটে যাবে ।
কীটনাশক জাতীয় বিষ – কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করার সময় নাকে মুখে গামছা বেঁধে হাতে দস্তানা পরে নিলে ভাল হয়। যদি হাতে কিংবা গায়ে ওষুধ লেগেই যায় তবে সাথে সাথে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ঘুমের ঔষধ – বমি করাতে হবে। গরম চা, কফি ও প্রচুর পানি পান করাতে হবে। রোগীকে সজাগ রাখার জন্য চেষ্টা করতে হবে। তারপর চিকিৎসকের নিকট নিতে হবে।
বিষ খেলে কি করনীয়
একনজরে দেখে নিন বিষ খেলে রোগীকে কি কি করতে হবে। যথা –
১। রোগীকে পরীক্ষা করে দেখতে হবে ।
২। তাৎক্ষণিক মেডিকেল সাহায্যের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩। রোগী যখন বমি করে তখন সেই বমি কোনও পাত্র, পলিথিন কিংবা শিশি বোতলে সংগ্রহ করতে হবে। যাতে করে কখন, কি ও কতটুকু বিষয় খেয়েছে তা ডাক্তার জানতে পারে।
৪। রোগী যদি অজ্ঞান থাকে তবে রোগীকে উপুড় করে শুইয়ে দিতে হবে এবং মাথা একদিকে ফিরিয়ে রাখতে হবে। মাথায় কোনও বালিশ ব্যবহার করা যাবে না, যদি বেশি বমি করে জামাকাপড় ভিজিয়ে ফেলে তবে তা সবিয়ে দিতে হবে।
৫। শ্বাস প্রশ্বাস ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ থাকলে কৃত্রিম পদ্ধতিতে চালু করতে হবে।
৬। রোগী ঝিমিয়ে পড়লে তাকে জাগিয়ে রাখতে হবে ।
৭। শক হলে তার প্রতিকার করতে হবে।
৮। উপযুক্ত নিরোধক পাওয়া গেলে তা প্রয়োগ করতে হবে ।
শেষ কথা
এই ছিল আজকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা। মনে রাখবেন প্রাথমিক চিকিৎসা মানে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নয়। তাই, প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর অবশ্যই রোগীকে হাসপাতাল বা ডাক্তারের নিকট নিতে হবে।
….ধন্যবাদ ৷৷