ছোটবেলায় দেখতাম, কাক সাবান চুরি করত। কিন্তু এখন করে না কেন?
একদমই নুতন পামোলিভ সাবান নিয়ে, স্নান করতে, কল তলায় গেছি, কল থেকে, বালতিতে জল ভরে, পেছন ফিরে দেখি, মুহূর্তেই উধাও সাবান, নিয়ে গেছে কাকে।
আজ থেকে, প্রায় চল্লিশ বছর আগেকার ঘটনা।
কিন্তু, এখন আর তেমন দেখা যায় না।
কারণ, কাকের সংখ্যাই কমে গেছে।
শুধু, কাক নয়, নানা ধরণের পাখীর সংখ্যাই কমে গেছে।
আবহাওয়ার পরিবর্তন, বন উজাড় করে দেয়ার মতো ঘটনা, গাছ, গাছালি কেটে, সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরীর প্রতিযোগিতা, কলকারখানা স্থাপন, বিষাক্ত ধোঁয়া, এ সবের মাঝে পাখীরা স্বচ্ছন্দ নয়।
ফলে, পাখীর কিচির মিচির ডাকে ভোরবেলা ঘুম ভাঙার কথা, রূপকথার মতোই শোনায়।
মোবাইলে এলার্ম টোনে পাখীর ডাকে, ঘুম ভাঙে, কিন্তু, পাখীর কথা আর মনে আসে না, কারণ, ঘুম জড়ানো চোখ তখন, স্থির হয়ে থাকে, হোয়াটস্যাপে।
দ্বিতীয়ত: আগেকার তুলনায়, সাবানের চাইতে, লিকুইড সাবানের ব্যবহার, ব্যাপক ভাবে বেড়েছে।
লিকুইড সাবানের ফলে, সাবান জলে ভিজে নষ্ট হওয়ার সমস্যা কমে গেছে, এবং একটি সাবান একাধিক ব্যক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে, একটি অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ কাজ করে, সেটা এড়িয়ে যাওয়া যায়।
এসব কারণেই হয়তো কাকের সাবান নিয়ে চলে যাওয়ার দৃশ্য, আজকাল আর সচরাচর চোখে পড়ে না।
পরিশেষে, কাক কে চোর বলাতে, মর্মাহত হলাম।
কারণ ?
কাক তো ঠিক চুরি করে না, প্রকাশ্য দিবালোকে, মালিকের চোখের সামনেই, টাকা পয়সা, ধন রত্ন তো নয়, ছোঁ মেরে, কেবল সাবান টা নিয়েই চলে যায়।
যতই চিৎকার, চেঁচামেচি করা হোক, ঢিল ছোঁড়া হোক, লম্বা বাঁশ বা লাঠি জাতীয় কিছু একটা নিয়ে আসার জন্য যতই চিৎকার করা হোক, সে তো, পাত্তা দেয়া দূরের কথা, ভ্রূক্ষেপও করে না,
“কা কস্য পরিবেদনা”।
ধন্যবাদ।