প্রায় ২ লাখ কেজি ওজন নিয়ে প্লেন কিভাবে আকাশে ওড়ে?
প্লেন এতো ওজন (২ লক্ষ কিলোগ্রাম) নিয়ে কিভাবে আকাশে ওড়ে তা অনুধাবন করতে চাইলে প্রথমে আপনাকে প্লেনের যান্ত্রিক গঠনের দিকে লক্ষ্য করতে হবে। বিশেষ করে বিমানের ইঞ্জিন ও পাখার গঠন এবং তা কিভাবে কাজ করে সেদিকে লক্ষ্য করতে হবে। সবার আগে যেটা মনে রাখতে হবে তা হলো প্লেনের ইঞ্জিন গাড়ির ইঞ্জিনের মতো নয়।
প্লেন উড্ডয়নের সময় নিম্নোক্ত চারটি বিষয় কাজ করে (যেমনটা চিত্রে প্রদর্শিত হয়েছে);
- উত্তোলন / Lift
- ওজন / Weight
- ধাক্কা (পিছনে) / Thrust
- টান (সম্মুখে) / Drag
প্লেনের ইঞ্জিন বিশেষভাবে নকশা করা হয়েছে। প্লেনের ইঞ্জিন এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যা চলন্ত অবস্থায় সমগ্র প্লেনকে অতি উচ্চ গতিতে সম্মুখে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। যার ফল স্বরূপ প্লেনের পাখায় অতি উচ্চ গতিতে বায়ু প্রবাহিত হয়। এবং বায়ু প্রবাহ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে থাকে। পাখার সুনিপুন যান্ত্রিক গঠনের ফলে উড্ডয়নের সময় এই উচ্চ গতির বায়ু পাখার সাহায্যে ভূমি অভিমুখে চালিত হয়ে বল প্রয়োগ করে। এজন্য খেয়াল করলে দেখবেন বিমান যখন উড্ডয়নের প্রারম্ভে থাকে তখন এর পাখার সংকীর্ণ প্রান্ত নিম্নমুখী থাকে, যেন ইঞ্জিনের সহায়তায় প্রাপ্ত উচ্চ গতির বায়ু প্রবাহ পাখার সাহায্যে ভূমি অভিমুখে বল প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়। যার ফল স্বরূপ প্লেন ২ লক্ষ কিলোগ্রাম বা তার বেশি ওজন নিয়েও আকাশে উড়তে সক্ষম হয়।
আপনি জানলে অবাক হবেন যে প্লেন এর চেয়েও বেশি ওজন নিয়ে আকাশে উড়তে সক্ষম। যেমন ধরুন, আন্তোনভ এ. এন. – ২২৫ হলো একটি কার্গো বিমান যা সাধারণত বিশাল আকৃতির কোনো একক পণ্য আন্তর্জাতিক সীমানায় পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয় আর খালি অবস্থাতেই এই প্লেনটির ওজন ২৮৫,০০০ কিলোগ্রাম। বিমানটিকে আকাশের দৈত্য(Monster of the Skies) বলা হয়।
প্লেনটি সোভিয়েত আমলের তৎকালীন ইউক্রেনে তৈরী করা হয়েছিল। পণ্য সহ উড্ডয়নের সময় এর সর্বমোট ওজন ৬৪০,০০০ কিলোগ্রাম পর্যন্তও হতে পারে।