বরাহ বা শুকর ভক্ষণ করা ইসলাম ধর্মে নিষেধ কেন?
আরেকবার বলে নিচ্ছি, আমি বিশেষজ্ঞ নই। কোথাও ভুল হচ্ছে মনে হলে মন্তব্য করে জানাবেন।
ইসলাম ধর্মে শূকর নিষিদ্ধ হবার কোন নির্দিষ্ট কারন বলা নেই। তবে সাধারণ বিশ্বাস হচ্ছে, শূকর একটা নোংরা প্রাণী। আপনি যদি আরো বিশদভাবে চিন্তা করতে চান তবে বলতে হয়, একটি জনগোষ্ঠীর খাদ্যাভ্যাস নির্ভর তাদের আবাস্থলের ভৌগলিক এবং পরিবেশগত অবস্থার উপরে। বাংলাদেশে আমাদের আমিষের প্রধান উৎস মাছ। আপনি হয়ত ভারতবর্ষেরই কোন এলাকা পাবেন যেখানকার মানুষেরা মাছের গন্ধও সহ্য করতে পারেনা। মধ্যপ্রাচ্যের মানুষেরা আসলে অনেক আগে থেকেই শূকরে অভ্যস্থ ছিলনা। খ্রীস্টান এবং ইহুদী দুই ধর্মেই শূকর নিষিদ্ধ। ওই এলাকার প্রথাগত ধর্মের মানুষের কাছেও শূকর পছন্দনীয় ছিলনা। প্রাচীন মিশরেও শূকর অস্বাস্থ্যকর খাবার বলে মনে করা হত। হয়ত ওই অঞ্চলে কোন মহামারী হয়েছিল যেটা শূকরের মাধ্যমে ছড়িয়েছিল বলে তারা ধারণা করেছিল। বিশেষভাবে যারা অভিজাত ছিল তারা শূকর খেতনা। পরবর্তীকালে ওই অঞ্চলে উদ্ভাবিত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মগুলোও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। এই ব্যাপারটা কিন্তু আমাদের উপমহাদেশেও আছে। উচ্চ বর্ণের হিন্দুরা শূকর খায়না তবে নিম্নবর্ণের অনেকের কাছেই শূকর আদরনীয় খাবার।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে খ্রীস্টান ধর্ম যখন ইউরোপে প্রবেশ করে তখন সেখানকার মানুষেরা শূকর খুব পছন্দ করত। শূকর অনেক ইউরোপিয়ানদের আমিষের প্রধান উৎস ছিল। তাদের জন্য তাই শূকর খাওয়া ছেড়ে দেয়া সম্ভব ছিল না। নিজেদের আদি অনেক সংস্কৃতি এবং রীতিনীতির সাথে তারা শূকর খাওয়াটাও মূলধারার খ্রীস্টান ধর্মের অংশ করে নেয়।
আমি এখানে বিশেষ কোন রেফারেন্স দিলাম না, আপনারা কেউ আগ্রহী হলে গুগল করলেই পেয়ে যাবেন। তারপর ও কেউ রেফারেন্স চাইলে অনুগ্রহ করে মন্তব্যে জানান, আমি চেষ্টা করব।