বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে যেহেতু প্রায় সমস্ত জাহাজ অদৃশ্য হয়ে যায়, তাহলে পৃথিবীর সমস্ত আবর্জনা জাহাজে করে ওখানে পাঠিয়ে দিলেই তো সমস্যা মিটে যাবার কথা। তাই নয় কি?
হা হা হা। অসাধারণ আইডিয়া। আপনার চিন্তা শক্তির প্রশংসা করতে হয়।
বারমুডা ট্রাই-অ্যাঙ্গেল যা শয়তানের ট্রাই-অ্যাঙ্গেল নামে পরিচিত হচ্ছে ফ্লোরিডা, বারমুডা ও পোর্ত রিকো নামক স্থান দ্বারা আবদ্ধ আটলান্টিক মহাসাগরের অংশবিশেষ।
Bermuda triangle; image from Wikipedia
আঠারো ও উনিশ শতকে অনেক জাহাজ এই অঞ্চলে এসে রহস্যজনক ভাবে হারিয়ে যায় । কোনো বিশ্বাসযোগ্য কারণ ছাড়া, কোনো বার্তা না দিয়েই এ জাহাজগুলো স্রেফ উধাও হয়ে যেত। এমনও হয়েছে যে উদ্ধারকারী জাহাজও উদ্ধার করতে গিয়ে হারিয়ে গেছে। বিংশ শতাব্দীতে বিমান আবিষ্কারের পর আরও আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটনা ঘটতে থাকে। আকাশ থেকে কোনো বেতার বার্তা না দিয়েই বিমান গায়েব হয়ে যেতে থাকে। এটাই বারমুডা ট্রাই-অ্যাঙ্গেলের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।
এবার আসি আপনার প্রশ্নের উত্তরে। আপনি নিশ্চয়ই ইউটিইবের কোনো ভিডিও দেখে প্রশ্নটি করেছেন। এগুলোতে সবসময়ই বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলে। বাস্তবতা হচ্ছে ঐ অঞ্চল দিয়ে চলাচলকারী জাহাজ ও বিমানের খুব এবং খুবই কম একটা অংশ নিরুদ্দেশ হয়েছে। আর নিরুদ্দেশ হয়েছে মানে এই না যে পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে। ভর হারিয়ে যেতে পারে না। এটা পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মের বাইরে (নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার কথা বিবেচনায় না আনলে) আটলান্টিক মহাসাগর কোনো ছোট- খাটো কোনো লেক নয়। ডুবে গিয়ে সমুদ্রের তলদেশে হারিয়ে গেলে তো খুজেঁ পাওয়া খুবই কঠিন। তাছাড়া তখন এত উন্নত প্রযুক্তি ছিল না। বর্তমানের জাহাজ-বিমানগুলো অত্যাধুনিক, যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই শক্তিশালী, আবহাওয়া বিঙ্গান উন্নত। তাই পঞ্চাশের দশকের পর থেকে বারমুডা ট্রাই-অ্যাঙ্গেলে জাহাজ ও বিমান আর রহস্য জনক ভাবে হারিয়ে যায় না। এখানে সমস্ত জিনিস অদৃশ্য হয়ে যায় এই তথ্যটা ভুল।
এখন যদি ওইখানে নিয়ে দুনিয়ার সব আবর্জনা নিয়ে ফেলেন তাহলে পানি দূষণ আর সামুদ্রিক পানির ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হবে না।