বিয়েতে নবীজি সা. দেনমোহর কত দিয়েছিলেন?

বিয়েতে নবীজি সা. দেনমোহর কত দিয়েছিলেন?

Add Comment
  • 1 Answer(s)

    তরুণ বয়সে মহানবী সা. নির্দিষ্ট কোনো কাজ করতেন না। তবে বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানা যায় তিনি বনি সাদ গোত্রের বকরি চড়াতেন। আবার কয়েক কিরাত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে মক্কার অনেকের বকরি চড়াতেন।

    ২৫ বছর বয়সে আল্লাহর রাসূল সা. ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হন। এ সময় তিনি খাদিজা রা.-এর বাণিজ্যিক পণ্য নিয়ে সিরিয়ায় সফর করেন। ইবনে ইসহাকের বর্ণনামতে, খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ একজন অভিজাত ও ধনবতী নারী ছিলেন। বুদ্ধি, সৌন্দর্য, অর্থ সম্পদ, বংশমর্যাদায় ছিলেন সেকালের শ্রেষ্ঠ নারী।

    তিনি বিভিন্ন লোককে দিয়ে পণ্য কিনতেন, সেসব পণ্য বিক্রি করতেন। লাভের একটা অংশ তিনি গ্রহণ করতেন। কুরাইশ বংশের লোকেরাও ব্যবসা করতেন। খাদিজা রা. মহানবী সা.-এর সততা, সচ্চরিত্র এবং নম্রতার কথা শুনে তাকে ব্যবসায় নিয়োগের প্রস্তাব পাঠালেন। তিনি তার ক্রীতদাস মায়সারাকে সঙ্গে নিয়ে বাণিজ্যিক পণ্য নিয়ে সিরিয়ায় সফর করার প্রস্তাব দিলেন এবং জানালেন যে, তিনি অন্যদের যে পারিশ্রমিক দেবেন মুহাম্মদ সা.-কে তার থেকে বেশি দেবেন।

    রাসূল সা. এ প্রস্তাব গ্রহণ করলেন এবং বাণিজ্যিক পণ্য নিয়ে সিরিয়া সফর করলেন। রাসূল সা. বাণিজ্যিক সফর থেকে ফিরে আসার পর খাদিজা রা. খেয়াল করলেন এবার অতীতের থেকে অনেক বেশি লাভ হয়েছে তার। বাণিজ্যিক সফরের পুরোটা সময় আল্লাহর রাসূলের সঙ্গে ছিল খাদিজা রা.-এর ক্রীতদাস মায়সারা। খাদিজা রা. তার কাছ থেকে আল্লাহর রাসূল সা.-এর উন্নত চরিত্র, সততা, ন্যায়পরায়ণতার ভূয়সী প্রশংসা শুনলেন। এসব শুনে তিনি মনে মনে আল্লাহর রাসূল সা.-কে ভালোবেসে ফেললেন এবং মুহাম্মদ সা.-কে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার ইচ্ছা জাগলো তার মনে।

    এর আগে মক্কার অনেক সম্ভ্রান্ত ও নেতৃস্থানীয় লোকজন খাজিদা রা.-কে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু তিনি কোনো প্রস্তাবই গ্রহণ করেননি। সিরিয়া সফর থেকে মুহাম্মদ সা. ফেরার পর তিনি তাকে বিয়ের ইচ্ছা গোপনে লালন করতে লাগলেন। তিনি মহানবী সা.-কে বিয়ের গোপন ইচ্ছা নিজের বান্ধবী নাফিসা বিনতে মুনব্বিহর কাছে ব্যক্ত করলেন। নাফিসা গিয়ে রাসূল সা.-এর কাছে খাজিদা রা.-এর পক্ষ থেকে প্রস্তাবের কথা জানালেন। রাসূল সা. রাজি হলেন এবং তার চাচাদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন। তাঁর চাচারা খাদিজার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠালেন। সবার পরামর্শ ও আলোচনার মাধ্যমে বিয়ে হলো প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আম্মাজান খাজিদা রা.-এর। এ বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন বনি হাশেম ও মুযার গোত্রের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা। বিয়ের সময় রাসূল সা.-এর জীবিকা নির্বাহের নিজস্ব যথেষ্ট উপায়-উপকরণ ছিল। পারিবারিক উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য সম্পদ পেয়েছিলেন। এছাড়াও নিজের কষ্ট-মেহনতের উপার্জন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে যথেষ্ট আয়-রোজগার ছিল। আর এই ব্যবসা-বাণিজ্য তাঁকে সাধারণ স্তর থেকে ধনাঢ্যতার স্তরে পৌঁছে দিয়েছিল। এসব অর্থ থেকে তিনি বিপুল পরিমাণ দান-সদকা করতেন।

    সিরিয়া থেকে বাণিজ্যিক সফর শেষ করে ফিরে আসার দুই মাস পর এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিয়ের মোহরানা হিসেবে বিশটি উট দিয়েছিলেন। এ সময় আম্মাজান খাদিজা রা.-এর বয়স ছিল ৪০ বছর। রাসূল সা.-এর বয়স ছিল ২৫। এটাই ছিল রাসূল সা.-এর প্রথম বিয়ে। খাদিজা রা.-এর জীবদ্দশায় রাসূল সা. অন্য কারো সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি। (আর রাহীকুল মাখতুম,৭৭)

    Answered on May 6, 2024.
    Add Comment
  • Your Answer

    By posting your answer, you agree to the privacy policy and terms of service.