মোদি তো ইরান, সৌদি আরব,মিশর, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া আরো অনেক মুসলিম দেশে সফর করেছে, তখন তো কিছু হইনি? তাহলে সে বাংলাদেশে আসাতে এত তোলপাড় হচ্ছে কেন?
বাংলাদেশিরা ভারতীয় সম্প্রদায় বিধায় মোদী কিছু বললেই বা ভারতে মুসলিমদের কিছু হলেই এর প্রতিক্রিয়া গিয়ে বাংলাদেশিদের উপর বেশি পড়ে। বাংলাদেশ অবস্থানগত দিক থেকে ভারতের ভিতরে অবস্থান করায় এই পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। যা কিছুই ভারতে ঘটবে এর প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশে আগে পড়বে কারন আজকের বাংলাদেশ বিগত দিনের ভারতের পূর্ববঙ্গ ছিলো। তাই নরেন্দ্র মোদী ভারতে কিছু বললে তার প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশে গিয়ে পড়ে।
ভারতের আনাচে কানাচে বহু বাংলাদেশি থাকে ভারতীয় হিসেবে। এরা ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে ভারতের পূর্ববঙ্গ (বাংলাদেশ) থেকে নানা অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে সেখানে পাড়ি জমায়। এছাড়াও মুসলিম বাংলাদেশিরা ভাগ্য বদলের জন্য ভারতের বিভিন্ন হোটেলে হোটেল বয় ও বাসা বাড়িতে ঝি এর কাজ করে। এছাড়া মুম্বাই ও কলকাতার পতিতালয়ে বাংলাদেশি নারীদের পাচার করা হয় ভারতীয় যুবক ও মাঝবয়সীদের সেক্সের চাহিদা পূরনের জন্য।
বাংলাদেশি ও ভারতীয় আজ মিলে মিশে একাকার। বাংলাদেশে ভারতপন্থী সরকার থাকাতে এটা আরো দৃশ্যমান। বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা সরকার বিরোধী রাজনীতি করে তারা ভয়ে থাকে এই বুঝি মোদী বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য করে দিলো আওয়ামী সরকারের সহায়তায়।
বাংলাদেশিরা সবসময় একটা ভয়ে থাকে যে হাসিনা মারা গেলে রাজনৈতিক শুন্যতার সুযোগে ভারত তার পূর্ববঙ্গ রাজ্য পুনরায় নিয়ে নেবে এবং বাংলাদেশ বলে তখন কিছু থাকবে না। সবটাই ভারত হয়ে যাবে। এই ধরনের আশংকা অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর ক্ষেত্রে নেই বিধায় সেখানে নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে এত প্রতিক্রিয়া হয় না।
বাংলাদেশিরা মুখে যাই বলুক না কেনো, বাস্তবে জাতিগত দিক থেকে ভারতীয় সম্প্রদায়ের অংশ বিধায় নানা ধরনের বীতি বাংলাদেশিদের মধ্যে কাজ করে। এই বুঝি দেশ ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে গেলো, এই বুঝি মোদী বাংলাদেশে বাংলাদেশিদের মধ্যে হিন্দুত্ববাদ কায়েম করলো। এই বুঝি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশলীগ এক সাথে হয়ে মুসলিম তৌহিদী জনতার উপর আক্রমন করলো, এই বুঝি হাসিনা মোদীকে বাংলাদেশ লিখে দিলো এইসব কল্পনা করে অনেক বাংলাদেশি।
পানির হিস্যা, বর্ডার কিলিং এসব বহু পুরনো ইস্যু কিন্তু মূলত নরেন্দ্র মোদীকে ইসলাম বিরোধী হিন্দুত্ববাদ প্রচার কারী হিসেবে তুলে ধরে বাংলাদেশের একটি অংশ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চায় বিধায় এমন প্রতিক্রিয়া যা অন্যান্য মুসলিম দেশে দেখা যায় না।
একদিকে মোদী বাংলাদেশের মন্দিরে পূজা অর্চনায় ব্যস্ত।
অন্যদিকে বাংলাদেশিরা মসজিদের সামনে মোদী বিরোধী আন্দোলনে ব্যস্ত।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা মারা গেলে যে কি বিশৃৃৃংখলা হবে সেটা কিছুটা আচ করা যায় নরেন্দ্র মোদীর আগমনকে কেন্দ্র করে। হাসিনা-খালেদা-এরশাদ যুগে সমাপ্তি প্রায় সন্নিকটে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর চিন্তার উদ্রেগ হওয়া স্বাভাবিক।রাজনৈতিক ভয়াবহ শূন্যতায় হয়তো একটা সময় বাংলাদেশিরা বাধ্য হবে নিজেদের হয় হেফাজতীদের কাছে, নয়তো ভারতের কাছে সপে দিতে। সেই পর্যন্ত একটা বিশৃৃ্ংখল অবস্থা চলবে এটা বলা যায়।