যুক্তরাষ্ট্রকে মার্কিন বলার কারণ কী?
৫০ টি রাষ্ট্র মিলে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন ডিসি এবং পোর্টোরিকো যুক্তরাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত হলেও তাদের রাষ্ট্র হিসেবে ধরা হয় না।
যদিও উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় অনেকগুলো দেশ রয়েছে শুধুমাত্র আমেরিকা নামটা লিখলে বা উচ্চারণ করলে সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রকেই বুঝায়। আমেরিকার বিশেষণ ‘আমেরিকান’, যেমন আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকান টিভি সিরিজ। আমেরিকান শব্দটি বিকৃত হয়ে কালক্রমে ‘মেরিকান’ এবং পরিশেষে ‘মার্কিন’ হয়ে দাঁড়ায়।
নতুন শব্দটির জন্ম নেয় ব্রিটিশ আমলে যখন আমেরিকা থেকে সস্তায় কাপড় এদেশে সয়লাব হয়ে গিয়েছিল। মার্কিন কাপড় শত ভাগ তুলার ধূসর রঙের কাপড়। পোশাক-পরিচ্ছদ, মশারির লাইনিং, ব্যাগ, বাস্কেট ইত্যাদি কাজে ব্যবহার হয়। এখনো কাপড়ের দোকানে দেশে তৈরি সস্তায় মার্কিন কাপড় পাওয়া যায়।
মার্কিন কাপড়
শুরুতেই উল্লেখ করেছি, ‘আমেরিকান কাপড়’ লোক মুখে কাল ক্রমে ‘মার্কিন কাপড়’ নাম নেয়। কাপড়ের নাম থেকে দেশটার নামও মার্কিন নামে পরিচিত হয়ে আলাপ-আলোচনায় ও বইপত্রে ঢুকে পড়ে।
স্থানের নামের সাথে কাপড়ের পরিচিতির আরো নজির রয়েছে। ইরাকের যে বন্দরে বিখ্যাত ঢাকার মসলিনের ক্রয়-বিক্রয় বড় কেন্দ্র ছিল তার নাম মসুল। মসুল বন্দরের নাম থেকে ঢাকার কাপড়ের নাম ইউরোপিয়ানদের কাছে মসলিন নামে পরিচিতি পায়।
মার্কিন কাপড় থেকে ভিন্ন হলেও এ সুযোগে ইতিহাস-ঐতিহ্যের খাতিরে ঢাকার বিখ্যাত মসলিন কাপড়ের সাথে নতুন শিক্ষার্থীদের পরিচয় করে দেয়া যায় বৈকি।
এক কালের পৃথিবী বিখ্যাত ঢাকার মসলিন
মসলিন কাপড় মিশরের ফারাও বা ফেরাউন, মোঘল ও অটোম্যান সম্রাটদের হেরেমের নারী, বিলেতের রানী, দেশ-বিদেশের রাজা বাদশা সম্রাট, সবার অঙ্গে শোভা পেত। মিশরের বিখ্যাত ক্লিওপেট্রা মসলিন কাপড়ের সমঝদার ছিলেন। আর্যদের এদেশে আগমনের আগে পাকিস্তানে মাটি খুঁড়ে বের করা মহেঞ্জোদর নগরীতেও মসলিন কাপড়ের আলামত পাওয়া গেছে।
মসলিন নামটাও ইউরোপিয়ানরা এদেশে আমদানি করে। সেই থেকে জামদানি নামের পাশাপাশি মসলিন নামটা চালু হয়ে যায়। ব্রিটিশদেরই কারসাজির কারনে বিখ্যাত মসলিন এখন ইতিহাসের পাতায় স্থান নিয়েছে।
রঙ বেরঙের ঢাকাই জামদানি
প্রসঙ্গক্রমে বলা যেতে পারে, বাংলাদেশের মত ভারত ও পাকিস্তানে আমেরিকা মার্কিন নামে পরিচিত।